নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৭ মে, ২০২১
আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক থেকে। আওয়ামী লীগের সভাপতি জাতীয় ইস্যুতে আওয়ামী লীগের না জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। তিনি আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মীরা আশা আকাঙ্খার কেন্দ্রবিন্দু এবং তার নির্দেশে অনুপ্রেরণা দিয়েই দল পরিচালিত হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতির যে অভিপ্রায়, আকাঙ্খা এবং নির্দেশনা সেটি মাঠে বাস্তবায়নের দায়িত্ব দলের সাধারণ সম্পাদকের। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হলেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে তৃণমূলের যোগসূত্র। দলের তৃণমূল রাজনৈতিক নির্দেশনা পায় এবং পুরো দলের যে চেইন অফ কমান্ড সেটি গড়ে ওঠে সাধারণ সম্পাদককে ঘিরে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজেই নানা রকম ঝুট ঝামেলার মধ্যে জরিয়ে গিয়েছেন।
বিশেষ করে তার ছোটভাই কাদের মির্জা একের পর এক বাক্যবাণ এবং সে ব্যাপারে তার নীরবতা আওয়ামী লীগে তার অবস্থানকে কিছুটা হলেও নড়বড়ে করে দিয়েছে। তাছাড়া করোনার কারণে তিনি একরকম ঘরবন্দি আছেন। ঘরে থেকে বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে তিনি তার অস্তিত্ব জানান দিচ্ছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ এমন একটা সংগঠন যেখানে ঘরে থেকে একটি করে বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে দল পরিচালনা করা যায় না। দলের নেতৃত্ব্ রাখা যায় না। কারণে সারা দেশের তৃণমূলের কর্মকাণ্ড, তৃণমূলের শৃঙ্খলা দেখা এবং তাদের অভাব অভিযোগ শোনা, তৃণমূলের সঙ্গে কেন্দ্রের যোগসূত্র রক্ষা করা এবং অন্তঃকলহ, বিরোধ মীমাংসা ইত্যাদি কাজগুলো করতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। সেটি করার ক্ষেত্রে সাধারণ সম্পাদক মূল ভূমিকা রাখেন।
তবে সাধারণ সম্পাদকের নাজুক পরিস্থিতি, তার অসুস্থতা এবং করোনা সময় আওয়ামী লীগের পঞ্চপান্ডবের উত্থান ঘটেছে। সাধারণ সম্পাদক নয় বরং আওয়ামী লীগের তৃণমূলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের যোগসূত্র, নেতাকর্মীদের বিভিন্ন বিষয়ের প্রশ্নের উত্তর, দলের অন্তঃকলহ মেটানো এবং হতাশ কর্মীদের চাঙ্গা করাসহ নানা রকম দলের খুঁটিনাটি কাজ সামলাচ্ছেন আওয়ামী লীগের ৫ জন নেতা। আওয়ামী লীগের মধ্যেই বলা হচ্ছে যে, পঞ্চপাণ্ডব। রাজনৈতিকভাবে তাদের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। তারা একে অন্যের সঙ্গে তাদের বন্ধুত্বও রয়েছে। আর দীর্ঘদিন ছাত্র রাজনীতি, যুব রাজনীতি করে তারা তাদের নিজেদের মধ্যে খুব ভালো বোঝাপড়া করে নিয়েছেন। আর যে কারণে তারা পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতেই সারাদেশের আওয়ামী লীগের সংকট, সম্ভাবনা এবং কর্মসূচিগুলো করছেন। সব বিষয়ে তারাই আওয়ামী লীগ সভাপতির সাথে যোগাযোগ করে তৃণমূলে পরামর্শ দিচ্ছেন বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছেন। যে ৫ জন আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে সারাদেশের কর্মীদের সমন্বয় করছেন, পরামর্শ দিচ্ছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন,
১. জাহাঙ্গীর কবির নানক: জাহাঙ্গীর কবির নানক আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং তিনিই এই করোনাকালীন সময়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন। কারণ সারাদেশে নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং আওয়ামী লীগ সভাপতির বিভিন্ন নির্দেশনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তিনি অন্যতম মূল ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। এই করোনার সময় তিনি দেশের বিভিন্ন এলাকা সফর করছেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিশছেন।
২. আবদুর রহমান: আরেকজন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমানও জাহাঙ্গীর কবির নানকের সঙ্গে মিলে দেশের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডগুলো দেখভাল করছেন।
৩. বাহাউদ্দিন নাছিম: আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু এই করোনাকালীন সময়ে তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অন্যতম আশা আকাঙ্খার প্রতীকে পরিণত হয়েছেন। বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীদের সমস্যা, জিজ্ঞাসা ইত্যাদি এবং সংকট সমাধানে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছেন বাহাউদ্দিন নাছিম।
৪. মির্জা আজম: মির্জা আজম আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। মির্জা আজম সাংগঠনিক সম্পাদক হলেও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকার কারণে সারাদেশে তার নেটওয়ার্ক। কর্মীবান্ধব নেতা হওয়ার কারণে কর্মীদের সঙ্গে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন, দিচ্ছেন এবং কেন্দ্রীয় যে সিদ্ধান্ত সেটি তৃনমূলে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
৫. এস এম কামাল: এস এম কামাল সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনিও এই পঞ্চপান্ডবের সদস্য। যিনি সারাদেশের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমন্বয় রক্ষা করার কাজটি করছেন।
এই পাঁচজনই এখন আওয়ামী লীগের সারা দেশের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল কেন্দ্রে পরিণত হয়েছেন এবং তাদেরকে ঘিরেই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলো পরিচালিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সভাপতিও এদেরকে দিয়েই তার নির্দেশনাগুলো এবং অভিপ্রায়গুলো তৃণমূল পর্যায়ে জানাচ্ছেন।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক হোসেন
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।